Mystery of Creation of the Universe-4

10^–43s থেকে 10^-38s সময়কালকে ধরা হয় মহাএকীভবনের কাল। এ সময়ে মহাকর্ষ বল একীভূত অবস্থায় থাকা অন্য মৌলিক বলসমূহ থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং আদিমতম মৌলিক কণা ও প্রতি-কণাসমূহ তৈরি হতে শুরু করে। 
10^-36s থেকে 10^-32s সময়কালকে স্ফীতিকাল (time of inflation) হিসেবে ধরা হয়। এ সময়ে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা 10^32K থেকে 10^27K-এ নেমে আসে। এবং এ সময়েই সবল নিউক্লিয় বল অন্য দুটি একীভূত মৌলিক বল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময়ে মহাবিশ্ব সূচকীয় স্ফীতির (exponential inflation) মধ্য দিয়ে অতি দ্রুত প্রসারিত হয়। মহাজাগতিক স্ফীতি (cosmic inflation) নামে পরিচিত। বলা হয়ে থাকে যে, মহাবিশ্বের দিক-নিরপেক্ষতা এবং সমসত্ত্বতা বজায় রাখার জন্যই এই মহাজাগতিক স্ফীতির ঘটনা ঘটে। এই অতি ক্ষুদ্র স্ফীতিকালে ধারণা করা হয় মহাবিশ্বের রৈখিক মাত্রা 10cm থেকে প্রায় 10^26 গুণ বৃদ্ধি পায়। মহাএকীভবন যুগ শেষে রয়ে যাওয়া মৌলিক কণাসমূহ একটা অতি ঘন কোয়ার্ক-গ্লুয়ন প্লাজমা বা কোয়ার্ক-গ্লুয়ন সুপ বা কোয়াগমা (Quagma) রূপে পুরো মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। 10^-36s থেকে 10^-12s সময়কালকে তড়িৎ দুর্বল বলের কাল হিসেবে ধরা হয়। এ সময়ে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা 10^12K-এ নেমে আসে এবং অন্য দুটি মৌলিক বল থেকে সবল নিউক্লিয় বল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ফলে কণাসমূহের মিথস্ক্রিয়ায় WওZ বোসন ও হিগস বোসনসহ বিপুল সংখ্যক বিচিত্র ধরনের কর্ণার জন্ম হয়।
বিগ ব্যাং-এর 10^-12s থেকে 10^-6s সময়কালকে কোয়ার্ক কাল হিসেবে ধরা হয়। এ সময়ে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা কয়েক বিলিয়ন কেলভিন নিচে নেমে আসে এবং এ সময়েই চারটি মৌলিক বল তাদের বর্তমান রূপ ধারণ করে। কোয়ার্ক এবং প্রতি কোয়ার্ক পরস্পরের সংস্পর্শে এসে বিনাশিত হয় এবং বেরিয়নসূচন (Baryogenesis) নামক পদ্ধতিতে অতি সামান্য প্রায় প্রতি বিলিয়নে একটি করে কোয়ার্ক রক্ষা পায় যারা অবশেষে সংযুক্ত হয়ে পদার্থ গঠন করে।
বিগ ব্যাং-এর পরে 10^-6s থেকে 1s সময়কালকে হ্যাডরনের কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময়ে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা প্রায় 10^11 K-এ নেমে আসে। ফলে কোয়ার্কগুলো পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়ে হ্যাডরন গঠন করে। হ্যাডরন পর্বের চূড়ান্ত অবস্থায় ইলেকট্রনসমূহ প্রোটনের সাথে
সংঘর্ষের ফলে একীভূত হয়ে নিউট্রন উৎপন্ন করে এবং নিউট্রিনো নামে আর একটি কণা নির্গত হয়। পূর্বে ধারণা করা হতো নিউট্রিনোর কোনো ভর নেই। কিন্তু সম্প্রতি নিউট্রিনোর ভর নির্ণয়ে সফলতা লাভ করায় জাপানি পদার্থবিদ তাকাকি কাজিতা ও কানাডীয় পদার্থবিদ আর্থার বি. ম্যাকডোনাল্ড যুগ্মভাবে ২০১৫ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
 

তাকাকি কাজিতা (Takaaki Kajita) ১৯৯৮ সালে এবং আর্থার বি. ম্যাকডোনাল্ড (Arthur B.McDonald) ২০০১ সালে পৃথকভাবে নিউট্রিনোর ভর নির্ণয় করতে সক্ষম হন। তাঁরা নিউট্রিনোর ভর পরিমাপ করেন প্রায় 
1.78×10^-37 kg বা 0.12 থেকে 0.25 ev/c^2। একটি নিউট্রিনোর ভর ইলেকট্রনের ভরের তুলনায় অতি নগণ্য হলেও এই মহাবিশ্বের সকল নিউট্রিনোর সম্মিলিত ভর মহাবিশ্বের সকল দৃশ্যমান গ্যালাক্সিসমূহের সম্মিলিত ভরের সমান বলে মনে করা হচ্ছে। নিউট্রিনোর ভর খুব কম হওয়ায় এরা প্রায় আলোর বেগের কাছাকাছি বেগ নিয়ে মহাশূন্যে মুক্তভাবে বিচরণ করে। কিছু নিউট্রিনো ও নিউট্রন পুনঃসংযোজিত হয়ে নতুন প্রোটন-ইলেকট্রন যুগল গঠন করে। এ এলোমেলো মিলন ও পুনর্মিলনের সময় আধান শক্তি এবং ভর-শক্তির সংরক্ষণশীলতা বজায় থাকে।
বিগ ব্যাং-এর 1 সেকেন্ড থেকে 3 মিনিট কালকে লেপটনের কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হ্যাডরন কাল শেষে বেশির ভাগ, তবে সব নয়, হ্যাডরন ও প্রতি হ্যাডরন বিনাশিত হয় ফলে লেপটনসমূহ যেমন ইলেকট্রন এবং প্রতি ইলেকট্রন যেমন-পজিট্রন মহাবিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে। যখন ইলেকট্রন ও পজিট্রন সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন তারা পরস্পরকে বিনাশ করে এবং ফোটনরূপে শক্তির আবির্ভাব ঘটে। ফোটনসমূহ আবার পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে পর্যায়ক্রমে ইলেকট্রন পট্রিন যুগল তৈরি করে।

বিগ ব্যাং এরপর 3 মিনিট ও 20 মিনিট সময়কালকে নিউক্লিয় সংশ্লেষণের (Nucleosynthesis) কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময়ে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা এক বিলিয়ন কেলভিন বা 10^9K-এ নেমে আসে। এ সময়ে নিউক্লিয় ফিউশন বিক্রিয়ার ফলে প্রোটন ও নিউট্রন মিলিত হয়ে সরল প্রাথমিক মৌল (element) যেমন হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং লিথিয়ামের নিউক্লিয়াস গঠন করে। প্রায় 20 মিনিট পরে মহাবিশ্বের তাপমাত্রা ও ঘনত্ব যে পর্যায়ে নেমে আসে তাতে ফিউশন বিক্রিয়া আর চলতে পারে না।
বিগ ব্যাং-এর 3 মিনিট থেকে 240,000 বছর কালকে ফোটনের কাল বা বিকিরণের আধিপত্যের কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ক্রমান্বয়ে শীতলতার এই সুদীর্ঘকালে মহাবিশ্ব পারমাণবিক নিউক্লিয়াস ও ইলেকট্রনের প্লাজমার এক উষ্ণ অস্বচ্ছ সুপে পূর্ণ হয়ে যায়। লেপটন যুগের শেষে অধিকাংশ লেপটন ও প্রতিলেপটন বিনাশিত হওয়ায় মহাবিশ্বের শক্তি ফোটন দ্বারা
নিয়ন্ত্রিত হতে থাকে যারা অব্যাহতভাবে আহিত প্রোটন, ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসের সাথে মিথষ্ক্রিয়া ঘটাতে থাকে। ব্যাং-এর পর 240,000 বছর থেকে 300,0000 বছর সময়কালকে পুনঃসংযোগ ও ডিকাপলিং-এর যুগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময়ে তাপমাত্রা 3000 K-এ (যা বর্তমান সূর্যপৃষ্ঠের তাপমাত্রা) নেমে আসায় এবং ঘনত্বও হ্রাস পেতে কায় আয়নিত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম পরমাণু ইলেকট্রন গ্রাস (Capture) করে তড়িৎ নিরপেক্ষতা লাভ করে। এই কে Recombination বা পুনঃসংযোগ বলে। ইলেকট্রনগুলো পরমাণুতে বাঁধা পড়ায় অর্থাৎ মুক্ত না থাকায় মহাবিশ্ব হস্তভাবে আলোক স্বচ্ছতা লাভ করে। ফলে এই আদি মহাবিশ্বকে আজ পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে। এ সময়ে ইলেকট্রনের ও প্রোটনের সাথে ফোটন মিথষ্ক্রিয়ায় লিপ্ত হয়ে ডিকাপলিং প্রক্রিয়ায় পদার্থ গঠন করে। একালের শেষে মহাবিশ্বে প্রায় 75% হাইড্রোজেন, 25% হিলিয়ামের সাথে অতিকিঞ্চিৎ পরিমাণ লিথিয়ামের উপস্থিতি (Trace) দেখা যায়। বিগ ব্যাং এর পরে 300,000 বছর থেকে 150 মিলিয়ন বছর সময়কালকে অন্ধকার যুগ বা Dark Age হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রথম পরমাণু গঠনের পর থেকে প্রথম নক্ষত্র গঠনের পূর্ব পর্যন্ত কালকেই অন্ধকার যুগ বলা হয়। কারণ এ সময়ে ফোটন থাকলেও আলো দেওয়ার মতো কোনো তারকা সৃষ্টি না হওয়ায় আক্ষরিকভাবে সে সময়টা অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। সময়ে রহস্যময় ডার্কম্যাটার বা অদৃশ্য বহুই মহাবিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছিল বলে ধারণা করা হয়।
বিগ ব্যাং এর 150 মিলিয়ন বছর থেকে 1 বিলিয়ন বছর সময় পর্যন্ত কালকে পুনঃআয়নায়নের (Reionization) কাল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময়ে প্রথম কোয়াসার (Quasar) তৈরি হয়। কোয়াসারকে বলা হয় আধা নক্ষত্র বা Quasi stellar রেডিও উৎস। যে তীব্র বিকিরণ এরা নিঃসরণ করে তা এর চারদিকের মহাবিশ্বকে পুনঃআয়নিত করে। এ সময় থেকে মহাবিশ্বের অধিকাংশ নিরপেক্ষতা হারিয়ে আয়নিত প্লাজমা দ্বারা পূর্ণ হয়ে যায়। বিগ ব্যাং-এর পর 300 থেকে 500 মিলিয়ন বছর পর তাপমাত্রা যখন কয়েক হাজার কেলভিনে নেমেছে এবং ইলেকট্রন ও নিউক্লিয়াসগুলোর পারস্পরিক তাড়িতচৌম্বকীয় আকর্ষণ অতিক্রম করার মতো পর্যাপ্ত শক্তি আর থাকেনি তখন তাদের মিলনের ফলে পরমাণু গঠন করা সম্ভব হয়। সম্পূর্ণ মহাবিশ্বই সম্প্রসারিত এবং শীতলতর হতে থাকত কিন্তু যে সমস্ত অঞ্চলের ঘনত্ব গড় ঘনত্বের চেয়ে সামান্য বেশি সেই সমস্ত অঞ্চলের অতিরিক্ত মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে সম্প্রসারণ ধীরতর হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এজন্য অবশেষে কোনো অঞ্চলে সম্প্রসারণ বন্ধ হয়ে নতুন করে চুপসে (Recollapse) যাওয়ার কথা। চুপসে যাওয়ার সময় এ সমস্ত অঞ্চলের বাইরের পদার্থের মহাকর্ষীয় আকর্ষণের ফলে এগুলোর সামান্য ঘূর্ণন শুরু হতে পারে। চুপসে যাওয়া অঞ্চলগুলো যত ক্ষুদ্রতর হবে ঘূর্ণনও তত দ্রুত হবে। শেষে অঞ্চলটি যখন যথেষ্ট ক্ষুদ্র হবে তখন মহাকর্ষীয় আকর্ষণের সাথে ভারসাম্য রক্ষা করার মতো পর্যাপ্ত দ্রুতি হবে ঘূর্ণনের। এভাবেই ঘূর্ণায়মান চাকতির মতো ছায়াপথগুলোর (Disklike rotating galaxies) জন্ম হয়েছে। অন্যান্য যে সমস্ত অঞ্চল ঘূর্ণন শুরু করতে পারেনি সেগুলো (উপবৃত্তাকার ছায়াপথ নামে) ডিম্বাকৃতি বস্তুপিণ্ডে (Oval shaped objects-এ পরিণত হয়।

কালের গতির সাথে ছায়াপথগুলোর হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাস ক্ষুদ্রতর মেঘ খণ্ডে ভেঙে যাবে এবং সেগুলো নিজেদের মহাকর্ষের চাপে চুপসে যেতে থাকবে। এগুলোর সংকোচন এবং অভ্যন্তরীণ পরমাণুগুলোর পরস্পর সংঘর্ষের ফলে গ্যাসের তাপমাত্রা বাড়তে থাকবে। শেষে যথেষ্ট উত্তপ্ত হলে নিউক্লিয় ফিউশন ক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে। এর ফলে হাইড্রোজেনগুলো আরও হিলিয়ামে পরিণত হবে। এ ঘটনায় যে উত্তাপ সৃষ্ট হয় তার ফলে চাপ বৃদ্ধি পাবে সেজন্য মেঘগুলোর অধিকতর সংকোচন বন্ধ হয়ে যাবে। এগুলো স্থিতি অবস্থায় (Stable state) বহুকাল পর্যন্ত আমাদের সূর্যের মতো নক্ষত্র হয়ে থাকতে পারে। তারা হাইড্রোজেন পুড়িয়ে হিলিয়াম তৈরি করে এবং তার ফলে যে শক্তি উৎপন্ন হয় সেটা আলোক ও তাপরূপে বিকিরণ করে। আরও বৃহৎ বৃহৎ তারকাগুলোর নিজেদের বৃহত্তর মহাকর্ষীয় আকর্ষণের সাথে ভারসাম্য রক্ষার (to balance) জন্য উত্তপ্ত হতে হয়, ফলে নিউক্লিয় ফিউশন ক্রিয়া (Nuclear fusion reaction) এত দ্রুত হতে থাকে যে মাত্র দশ কোটি বছরেই তাদের হাইড্রোজেন শেষ হয়ে যায়। তখন তাদের সামান্য সঙ্কোচন হয় এবং তাদের উত্তাপ বাড়ার সাথে সাথে হিলিয়াম অক্সিজেন এবং অঙ্গার (Carbon) এর মতো আরো ভারী মৌলিক পদার্থে রূপান্তরিত হতে শুরু করে। কিন্তু তার ফলে খুব বেশি শক্তি মুক্ত হয় না। সুতরাং একটা সংকট ঘনিয়ে আসে। তারপর কি ঘটে সেটা সম্পূর্ণ বুঝা না গেলেও মনে হয় তারকাটির কেন্দ্রীয় অঞ্চল চুপসে নিউট্রন তারকা অথবা কৃষ্ণগহ্বরের মতো ঘনীভূত অবস্থায় পৌছায়। তারকাটির বাইরের অঞ্চল অনেক সময় বিরাট এক বিস্ফোরণের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে বেরিয়ে যায়। এর নাম 'সুপারনোভা'। ছায়াপথটির সমস্ত তারকার তুলনায় এটি হয় সবচেয়ে উজ্জ্বল। তারকার জীবনকালের শেষ দিকে উৎপন্ন কিছু কিছু ভারী মৌলিক পদার্থ ছায়াপথের গ্যাসের ভিতরে নিক্ষিপ্ত হয়। এগুলো পরিণত হয় পরের প্রজন্মের তারকাদের ব্যবহৃত কাঁচামালের একটি অংশে। আমাদের সূর্য দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় প্রজন্মের তারকা। অতীতের সুপারনোভার ধ্বংসাবশেষযুক্ত। ঘূর্ণায়মান বায়বীয় পদার্থের মেঘ থেকে প্রায় পাঁচশ কোটি বছর আগে আমাদের সূর্য গঠিত হয়েছে। সেজন্য আমাদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের সূর্যে অধিকতর ভারী মৌলিক পদার্থের পরিমাণ শতকরা দুই ভাগ। ঐ বায়বীয় পদার্থের অধিকাংশই লেগেছে সূর্যকে সৃষ্টি করতে আর বাকিটা উড়ে বেরিয়ে গেছে। অবশিষ্ট অল্প পরিমাণ কিছু ভারী মৌলিক পদার্থ সংযুক্ত হয়ে কতকগুলো বস্তুপিণ্ড গঠিত হয়েছে। সেগুলোই এখন গ্রহ হয়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। আমাদের পৃথিবী ঐরকম একটি গ্রহ।
শুরুতে পৃথিবী ছিল অত্যন্ত উত্তপ্ত। পৃথিবীপৃষ্ঠ টগবগ করে ফুটত। পৃথিবীর কোনো বায়ুমণ্ডল ছিল না। কালে কালে পৃথিবী শীতল হলো এবং বিভিন্ন ভাসমান প্রস্তর থেকে নির্গত হওয়া বায়বীয় পদার্থের সাহায্যে নিজস্ব বায়ুমণ্ডল গঠন করল। এ আদিম বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন ছিল না, ছিল হাইড্রোজেন সালফাইডের মতো অনেক বিষাক্ত গ্যাস যা ছিল মনুষ্য বাস অনুপোযোগী ৷ কিন্তু অন্য কয়েক রকম আদিম জীব আছে যেগুলো এ পরিবেশে বৃদ্ধি পেতে পারে। সম্ভবত এগুলো প্রথম বিকাশ লাভ করেছিল মহাসমুদ্রে। বোধহয় কতকগুলো পরমাণুর আকস্মিক সমন্বয়ে কয়েকটি বৃহত্তর অবয়ব সৃষ্টি হয়েছিল । সেগুলোর নাম স্থূল অণু (Macromolecule)। এগুলো মহাসমুদ্র থেকে অন্যান্য পরমাণু সংগ্রহ করে সমরূপ অবয়ব গঠন করতে পারত। সুতরাং এভাবে তারা বংশ বৃদ্ধি ও বংশ রক্ষা করতে পারত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সন্তান সৃষ্টিতে ভুল হতো এবং শেষ পর্যন্ত ধ্বংস হয়ে যেত। কিন্তু দুয়েকটি এমন ভুল হতো, যার ফলে যে নতুন স্থূল অণু সৃষ্টি হতো সেগুলো বংশরক্ষা ও বংশবৃদ্ধিতে আরও বেশি পটু। সুতরাং তাদের অবস্থা হতো আর একটু সুবিধাজনক এবং আদিম স্থূল অণুগুলোর পরিবর্তে নিজেদের প্রতিস্থাপন (Replace) করার সম্ভাবনা থাকত। এভাবেই একটি বিবর্তনের ধারা শুরু হলো। তার ফলে ক্রমশ আরো জটিল থেকে জটিলতর আত্মজ সৃষ্টি করতে সক্ষম জীব বিকাশ লাভ করল। নানা পদার্থ আদিম জীবের ভক্ষ্য ছিল—যার মধ্যে অন্যতম হাইড্রোজেন সালফাইড। এরা অক্সিজেন পরিত্যাগ করতো। এভাবে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ধীরে ধীরে বায়ুমণ্ডল পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে। এর ফলে উন্নততর জীবের বিকাশ সম্ভব হয়েছে, যেমন—মাছ, সরীসৃপ, স্তন্যপায়ী জীব এবং পরিশেষে মানবজাতি।



বন্ধুরা আশা করছি আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে। আশা করছি আপনাদের কাজে লাগবে। তো বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি। পোস্টটি কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এ রকম আরও আর্টিকেল পড়তে আমাদের Sci-Tech Daily Blog টি ভিজিট করুন এবং Subscribe করে রাখুন।

Blog Link             : https://sciencetech26.blogspot.com/
Facebook Group : https://www.facebook.com/groups/230864208943355
Facebook Page    : https://www.facebook.com/scitechdaily26
Instagram            : https://www.instagram.com/scitechdaily26/
Twitter                 : https://twitter.com/SicTechdaily2
Pinterest              : https://www.pinterest.com/scitechdaily26/
YouTube              : https://www.youtube.com/channel/UC3hypIzJcpwRoBuToQzoeUg

Comments