১৯৮৯ সালে মহাজাগতিক পটভূমি এক্সপ্লোরার (Cosmic Background Explorer, COBE) বা কোবে স্যাটেলাইট
প্রেরণ করে মাইক্রোওয়েভ পটভূমি বিকিরণ পরিমাপ করা হয়। সাম্প্রতিক পরিমাপ থেকে জানা যায় যে, এই বিকিরণের শক্তি ঘনত্ব প্ল্যাঙ্কের সূত্রানুযায়ী 2.7K তাপমাত্রায় কৃষ্ণবস্তু বিকিরণের শক্তি ঘনত্বের অনুরূপ। এই তাপমাত্রা ব্যবহার করে হিসাব করলে দেখা যায় প্রতি ঘনমিটার স্থান প্রায় 4 × 10^8 ফোটন দ্বারা পূর্ণ, যারা মহাবিশ্বকে প্রায় 2.5 x 10^5 ev/m^3 শক্তি প্রদান করে এবং ফোটন প্রতি গড়শক্তি প্রায় 0.00063 eV । এ ফোটনসংখ্যা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এ কারণে যে বিগত প্রায় 13.8 × 10^9 বছর জুড়ে মহাবিশ্বে নিউক্লিয়ন ও ফোটনের অনুপাত প্রায় ধ্রুব রয়েছে। এ সকল পরীক্ষামূলক পর্যবেক্ষণ বিগ ব্যাং মডেলকে একটা শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
কণাপদার্থবিজ্ঞানীদের মহামিলনতত্ত্ব (Grand Unification Theory, GUT) এবং জ্যোতিপদার্থবিদদের বিগ ব্যাং মডেল মিলিয়ে সৃষ্টিতত্ত্বের একটা গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা পাওয়া সম্ভব। বর্তমান মহাবিশ্বের বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে কণাসমূহের নিম্নতাপমাত্রা এবং নিম্ন ঘনত্ব। এর গঠন এবং বিবর্তন মহাকর্ষ বল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যেহেতু মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত এবং শীতল হচ্ছে সুতরাং দূর অতীতে কণাসমূহ উচ্চতাপমাত্রা এবং উচ্চ ঘনত্বের অধিকারী ছিল। আমরা পিছিয়ে গিয়ে যদি মহাবিশ্বের প্রথম দিকে ফিরে যেতে পারি এমনকি আমরা যদি নক্ষত্রসমূহ বা গ্যালাক্সিসমূহ সৃষ্টিরও আগের সময়ে যেতে পারি যখন মহাবিশ্বের তাপমাত্রা এমন ছিল যে তাতে পরমাণুসমূহ আয়নিত হতে পারে, সে সময়ে মহাবিশ্ব ইলেকট্রন ও ধনাত্মক আয়নের প্লাজমারূপে ছিল এবং সে সময়ে তাড়িতচৌম্বক বল মহাবিশ্বের কাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। আমরা যদি আরো একটু পিছিয়ে যেতে পারি তাহলে সে সময়ে তাপমাত্রা এমন বেশি ছিল যে আয়নসমূহের মধ্যকার সংঘর্ষ প্রত্যেক স্বতন্ত্র আলগা নিউক্লিয়নকে আঘাত করতে থাকে। ফলে মহাবিশ্ব বিকিরণের সাথে ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন নিয়ে গড়ে ওঠে। এ সময়ে মহাবিশ্বের বিবর্তনের জন্যে প্রবল নিউক্লিয় বল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এরও আগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল দুর্বল নিউক্লিয় মিথষ্ক্রিয়ার। আমরা যদি আরো পিছনে চলে যাই তাহলে দেখতে পাবো ফোটন লেপটন ছাড়া মহাবিশ্ব জুড়ে ছিল কোয়ার্ক গ্লুয়ন প্লাজমার সুপ যাকে বলা হয় কোয়াগমা (Quagma)। এভাবে পিছোতে পিছোতে আমরা একটা সময়ে পৌছে যাবো যখন মহাবিশ্বের বয়স মাত্র 10^–43 s। এই সময়টাকে বলা হয় প্ল্যাঙ্ক সময় (planck time)। এই সময়ের আগে কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও মহাকর্ষ একীভূত অবস্থায় ছিল এবং আমাদের বর্তমানকালের কোনো তত্ত্বই সে সময়কার মহাবিশ্বের গান ব্যাখ্যা করতে অক্ষম। অর্থাৎ এ মৌলিক বাধা (Fundamental barrier) অতিক্রম করে প্ল্যাঙ্ক সময়ের পেছনে যাওয়ার ক্ষমতা আমরা এখনো অর্জন করতে পারিনি। প্ল্যাঙ্ক সময়ের পরে কিন্তু সকল পদার্থের ঘনীভবনের আগে মহাবিশ্ব কণা, প্রতি-কণা এবং ফোটন দিয়ে গঠিত ছিল। এ সময়কার মহাবিশ্বে আধিপত্য ছিল বিকিরণের। ফোটনের শক্তি ঘনত্ব বস্তুর শক্তি ঘনত্বের চেয়ে বেশি ছিল। বহু ও বিকিরণের মধ্যকার মিথস্ক্রিয়া নিম্নোক্তভাবে দেখানো যায়
ফোটন --------> কণা + প্রতিকণা
কণা + প্রতিকণা --------> ফোটন
অর্থাৎ ফোটন কণা প্রতি-কণা যুগল উৎপাদনে নিয়োজিত হতে পারে যাতে তাদের শক্তি কণা ও প্রতি-কণা যুগলের নিশ্চল শক্তিতে রূপান্তরিত হতে পারে অথবা কণা ও প্রতি-কণা একত্রিত হয়ে বিনাশিত হয়ে ফোটনে রূপান্তরিত হতে পারে। প্রতি ক্ষেত্রে ফোটনের শক্তি কণা ও প্রতি-কণার নিশ্চল শক্তির সমান হবে। 13.8 বিলিয়ন ( 13.8 × 10^9) বছর আগে বিগ ব্যাং সংঘটিত হওয়ার পর থেকে মহাবিশ্ব বিভিন্ন কাল (epoch) বা বিভিন্ন দশার (phase) মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। আদি মহাবিশ্ব এমন চরম অশান্ত অবস্থায় ছিল যে তাকে বিগ ব্যাং-এরপর প্রথম এক সেকেন্ডে যে বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে তা পরবর্তী বিলিয়ন বছরের চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশি। বিগ ব্যাং সংঘটিত হওয়ার পর মহাবিশ্ব বিবর্তনের মধ্য দিয়ে কীভাবে আজকের অবস্থায় উপনীত হয়েছে তার একটা ক্ষিপ্ত কালপঞ্জি আমরা এখানে দেওয়ার চেষ্টা করছি। 13.8 বিলিয়ন সময়কে আমরা কয়েকটি কালে বিভক্ত করতে পারি।
মহাবিশ্বের শুরু হচ্ছে প্ল্যাঙ্ক কাল থেকে। এর ব্যাপ্তি 0s থেকে 10^-43s পর্যন্ত, একে এক প্ল্যাঙ্ক সময়ও বলা হয়। এ কাল সম্পর্কে খুব কমই আমরা জানতে পেরেছি। সার্বিক আপেক্ষিক তত্ত্ব থেকে আমরা জানতে পারি যে, মহাবিশ্বের উদ্ভব একটি মহাকর্ষীয় অনন্যতা বা Gravitational singularity থেকে এবং ধারণা করা হয় যে, সে সময় সকল মৌলিক বলের তীব্রতা একই ছিল এবং সম্ভবত মহাকর্ষ বল, তাড়িতচৌম্বক বল, দুর্বল নিউক্লিয় বল এবং সবল নিউক্লিয় বল একটি মৌলিক বল হিসেবে একীভূত অবস্থায় ছিল। এ সময়ে মহাবিশ্ব মাত্র 10^-35 মিটার বা 1 প্ল্যাঙ্ক দৈর্ঘ্যের এলাকা জুড়ে বিরাজ করছিল এবং তাপমাত্রা ছিল প্রায় 10^32K, একে প্ল্যাঙ্ক তাপমাত্রাও বলা হয়ে থাকে।
10^–43s থেকে 10^-38s সময়কালকে...........চলবে
বন্ধুরা আশা করছি আজকের এই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।
আশা করছি আপনাদের কাজে লাগবে। তো বন্ধুরা আজ এখানেই শেষ করছি।
পোস্টটি কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। এ রকম আরও আর্টিকেল
পড়তে আমাদের Sci-Tech Daily Blog টি ভিজিট করুন এবং Subscribe করে রাখুন।
Blog Link : https://sciencetech26.blogspot.com/
Facebook Group : https://www.facebook.com/groups/230864208943355
Facebook Page : https://www.facebook.com/scitechdaily26
Instagram : https://www.instagram.com/scitechdaily26/
Twitter : https://twitter.com/SicTechdaily2
Pinterest : https://www.pinterest.com/scitechdaily26/
YouTube : https://www.youtube.com/channel/UC3hypIzJcpwRoBuToQzoeUg
Blog Link : https://sciencetech26.blogspot.com/
Facebook Group : https://www.facebook.com/groups/230864208943355
Facebook Page : https://www.facebook.com/scitechdaily26
Instagram : https://www.instagram.com/scitechdaily26/
Twitter : https://twitter.com/SicTechdaily2
Pinterest : https://www.pinterest.com/scitechdaily26/
YouTube : https://www.youtube.com/channel/UC3hypIzJcpwRoBuToQzoeUg
Comments
Post a Comment